নিজস্ব প্রতিবেদক::
বরিশাল অঞ্চলের নৌ পুলিশ আওতাধীন মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার কালীগঞ্জ নৌ পুলিশ ফাঁড়ি। আর এই ফাঁড়ি থেকে সামান্য কিছুটা দূরেই উত্তাল মেঘনা নদী। সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী গত ১২ অক্টোবর থেকে মা ইলিশ রক্ষায় নৌ পুলিশ সদস্যরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মেঘনা নদীতে নৌ অভিযান পরিচালনা করেছেন। মেঘনা নদীর উতাল ঢেউ আর মৌসুমি ও পেশাদার জেলেদের মারমূখী আচরণে অভিযান থেমে নেই নৌ পুলিশ ফাঁড়ির কর্মকর্তাদের।
মা ইলিশ রক্ষায় গত বুধবার মধ্যরাত থেকে টানা ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে। প্রজনন নিরাপদ করতে আশ্বিন মাসে অমাবস্যা ও পূর্ণিমা মাঝে রেখে প্রতিবছর এই বিধিনিষেধ জারি করে মৎস্য অধিদপ্তর। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ নিধন করায় এ বছর নদ-নদীর ৩২টি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে অধিদপ্তরটি। এর মধ্যে ইলিশের বরিশালের হিজলা ও মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলাসংলগ্ন মেঘনার সাতটি পয়েন্ট অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বাড়তি নজরদারি শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। জানা গেছে, কয়েক বছর ধরে এই পয়েন্টগুলোতে নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীদের বাধা দিতে গেলে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জেলেদের হামলার মুখে পড়তে হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে গুলি বর্ষণও করতে হয়েছে। এ কারণে এ বছর এসব এলাকায় বিশেষ নজর রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী স ম রেজাউল করিম।
সূত্রে জানা যায়, মেহেন্দীগঞ্জ ও হিজলার থানার আওতাধীন নদী গুলোতে রয়েছে জীবনের ঝুঁকি। গত বছর মা ইলিশ রক্ষা অভিযানে মৎস্য কর্মকর্তা ও প্রশাসনের উপর হামলা চালায় জেলেরা। মেঘনা, কীর্তনখোলা,কালাবদর,আড়িয়াল খাঁ তেতুলিয়াসহ বেশকিছু নদী রয়েছে ঝুঁকিপূণ। এসব নদীতে মা ইলিশ রক্ষা সরকারী নিয়ম অনুযায়ী ২২দিনের অভিযানে জেলেরা দেশীয় অন্ত্র, ইট ও লাঠি দিয়ে প্রশাসনের উপর হামলার চালানোর ঘটনা রয়েছে অহরহ।
তবে চলতি মাসে মা ইলিশ রক্ষায় সরকারী আদেশ মতে মেহেন্দীগঞ্জ থানাধীন শাখা নদী ও মেঘনা নদীতে দিন রাত সরকারী নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মা ইলিশ রক্ষায় কঠোর অবস্থানে রয়েছে কালীগঞ্জ নৌ পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ পরিদর্শক (ইনচার্জ) শরীফুল ইসলাম ও সেকেন্ড অফিসার এসআই গালিব। নিজেদের বুদ্ধিমতে ও নানা কৌশল অবলম্বন করে ঝুঁকি নিয়ে একেরপর এক অভিযান পরিচালনা করে আসছে।
এবিষয় কালীগঞ্জ নৌ পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ পরিদর্শক (ইনচার্জ) শরীফুল ইসলাম বলেন, নৌ পুলিশে বরিশাল অঞ্চলের পুলিশ সুপার কফিল উদ্দিন স্যারের নির্দেশে ও তার সু -পরামর্শে আমাদের আওতাধীন মেঘনা নদীসহ বিভিন্ন শাখা নদীতে মা ইলিশ রক্ষায় কঠোর অবস্থানে রয়েছি। আমাদের অভিযান চলমান থাকবে। আসা করি এই ২২দিন জীবন দিয়ে হলেও সরকারি আদেশ রক্ষা করবো।
এদিকে কালীগঞ্জ নৌ পুলিশ ফাঁড়ির সেকেন্ড অফিসার এসআই গালিব বলেন, গতকাল মেহেন্দীগঞ্জে প্রশাসন ও মৎস্য কর্মকর্তাদের উপর জেলেরা হামলা চালিয়েছে। কিছু কিছু স্থানে জেলারা মারমুখী অবস্থানে রয়েছে। মেঘনা নদীর উতাল ঢেউ আর জেলেদের অবস্থান বুজেই আমরা অভিযান পরিচালনা করে আসছি। বিন্দু মাত্র কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। সরকারী আদেশ অমান্য করে কেউ নদীতে নামতে পারবে না। আমাদের বরিশাল অঞ্চল নৌ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিদেশে আমরা আগামী দিনগুলো কৌশল অবলম্বন করে দেশের সম্পদ ও সরকারী আদেশ রক্ষা করবো।