স্টাফ রিপোর্টার : সরকারি নীতিমালা লঙ্ঘন করে খাস খতিয়ানের জমি বন্দোবস্ত নিয়ে বিসমিল্লাহ সুপার মার্কেট নামে স্থাপনা নির্মাণের পর বিক্রি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে সরকার হারিয়েছে বিপুল অংকের রাজস্ব। বিষয়টি সর্বত্র ছড়িয়ে পরলে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। ঘটনাটি বরিশাল নগরীর ৯ নম্বর ওয়ার্ডস্থ পোর্ট রোড এলাকার।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তরিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী বন্দোবস্তপ্রাপ্ত জমি বিক্রির কোন নিয়ম নেই। শুধু যে উদ্দেশ্যে লীজ দেওয়া হয়েছে তার জন্য ব্যবহার করা যাবে। জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, লীজদাতা যদি বন্দোবস্তের শর্ত লঙ্ঘন করে তাহলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্থানীয় বাসিন্দা শাহাদাত হোসেন ছৈয়াল জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে অকৃষি খাস জমি বন্দোবস্ত কেস নং ২২ কেটি/৮৭-৮৮ নং ভুক্ত, বরিশাল সদর মৌজার ৭০৫/৯০৪ নম্বর দাগের ৩.৯ শতক জমি সেলামী ডি.সি.আর মূল্যে বন্দোবস্ত নিয়েছেন। যাহা ১৯৯৬ সালের ১৬ অক্টোবর কবুলিয়াত দলিল রেজিষ্ট্রেশন হয় (দলিল নং ৫১৩৬/৯৬)। পরবর্তীতে তিনি অতিসম্প্রতি বন্দোবস্ত চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করে দুইটি সাব-কবলা দলিলমূল্যে জমি বিক্রি করেন। সূত্রমতে, লীজগ্রহীতা শাহাদাত হোসেন ছৈয়াল বন্দোবস্ত নেওয়া জমি বিএনপি নেতা শহিদ হোসেনের কাছে দুইটি সাব-কবলা দলিল মূল্যে বিক্রি করেছেন। এরপূর্বে লীজ গ্রহীতা উক্ত জমি থেকে ০.২৯ সহস্রাংশ জমি সাব-কবলা দলিল মূল্যে ৬৫ লাখ ৮৫ হাজার টাকায় (দলিল নং ১৫৬৯৭/১২) এবং ২০২৩ সালের ৩১ জুলাই ০১ শতক জমি সাব-কবলা দলিল মূল্যে ৩০ লাখ টাকায় (দলিল নং ৯৫০৮/২৩) বিক্রি করেন। অভিযোগ রয়েছে, লীজ গ্রহীতা শাহাদাত হোসেন ছৈয়াল অতিসম্প্রতি শহিদ হোসেনের কাছে সাব-কবলা দলিল মূল্যে সরকারি বন্দোবস্ত নেওয়া জমি বিক্রির আগে ২০১১ সালের ৭ জুন লীজকৃত জমির দেড় শতক জনৈক আনোয়ার হোসেন হাওলাদারের কাছে ৩৪ লাখ ৬ হাজার টাকায় বিক্রির জন্য বায়নাচুক্তি করেছিলেন।
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রে জানা গেছে, সরকারের অনুমতি ছাড়া উত্তরাধিকারী সূত্র ব্যতিত লীজকৃত জমি অন্য কোথাও হস্তান্তর করা হলে বাজার মূল্যের ২৫% অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু সরকারি জমি বন্দোবস্ত নেওয়া শাহাদাত হোসেন ছৈয়াল সরকারি শর্ত অমান্য করে জমি বিক্রি করেছেন। ফলে সরকার হারিয়েছে বিপুল অংকের রাজস্ব।
এ ব্যাপারে সরকারি জমি বন্দোবস্ত নেওয়া লীজগ্রহীতা শাহাদাত হোসেন ছৈয়ালের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি আমার জমি বিক্রি করেছি। এখানেতো কোন সমস্যা দেখছি না। তবে লীজকৃত জমি সাবকবলা দলিল মূল্যে বিক্রি করার কোন নিয়ম নেই জানিয়ে, বরিশাল সদর সাব-রেজিস্টার অসীম কল্লোল বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। নথিপত্র দেখে বিষয়টি বলতে পারবো।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম বলেন লীজদাতা যদি বন্দোবস্ত সর্ত লঙ্ঘন করে তাহলে বিষয় টা খতিয়ে দেখবো। সত্যতা পেলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।