নিজস্ব প্রতিবেদক: আলোচিত ঝালকাঠির ছত্রকান্দায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় ১৭জনের মৃত্যুর ঘটনায় ঘাতক বাসের চালক মোহন খান’কে ঢাকার আশুলিয়া থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। হালকা লাইসেন্স নিয়ে ভারী গাড়ি চালাতো ঘাতক বাস চালক মোহন খান (৪০)। শুধু তাই নয় অতিরিক্ত যাত্রী ও বেপরোয়া গতি দূর্ঘটনার প্রধান কারণ বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
ব্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠা থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে আসছে। সৃষ্টিকাল থেকে সন্ত্রাসী, খুন, মাদক,
ছিনতাইকারী, অপহরণ ও প্রতারকদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে সংগঠিত চাঞ্চল্যকর এবং আলোচিত অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে থাকে এই সংস্থাটি। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৭ই জুলাই আনুমানিক ৯ ঘটিকায় পিরোজপুর-বরিশাল আঞ্চলিক মহা সড়কের
ছরতকান্দা নামক স্থানে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাইকৃত বাশার-স্মৃতি নামের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কের পাশে পুকুরে
দুর্ঘটনায় পতিত হয়। উক্ত ১৭ জন এবং ৩৮ আহত হয়। মর্মান্তিক এই ঘটনায় সারা দেশ আতঙ্কিত হয়। নিহতদের আত্মীয়-স্বজনের কান্না ও আহাজারীতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। পুলিশ বাদী হয়ে ঝালকাঠি সদর থানায় সড়ক পরিবহন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। সড়ক দুর্ঘটনার বিষয়টি বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াসহ সামাজিক যোগাযোগ
হলে দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচিত হয় এবং সারাদেশের মানুষ নিহতদের স্মরণে শোক প্রকাশ করে।
চালক ও তার সহযোগীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।
এরই ধারাবাহিকতায়, সদরদপ্তর গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-৮ এর আভিযানিক দল গত রাতে ঢাকার আশুলিয়া এলাকা থেকে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মূলহোতা বাস চালক মোঃ মোহন খানকে গ্রেফতার করে। ইতিপূর্বে ঘাতক বাসের সুপারভাইজার শফিককেও আটক করতে সক্ষম হয় ব্যাব। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত বাস চালক বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর বিষয়ে তথ্য প্রদান করে।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত মোহন গত ২২জুলাই ২০২৩ স্মৃতি পরিবহনের বাসটি নিয়ে ভাঙারিয়া থেকে বরিশাল যাওয়ার উদ্দেশ্যে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই বরিশালের উদ্দশ্যে যাত্রা করে। পথে বিভিন্ন স্টপেজ থেকে বাসটিতে আরও যাত্রী ধারন করে এবং বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাতে
থাকে। পরবর্তীতে সকাল আনুমানিক ৯. ৩০ মিনিটের সময় ঝালকাঠির ছতরকান্দা নামক স্থানে পৌঁছালে অতিরিক্ত গতির কারণে ড্রাইভার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কের পাশের পুকুরের পানিতে পরে দুর্ঘটনা ঘটায়।
ফায়ার সার্ভিস, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ স্থানীয় দুর্ঘটনায় পতিত বাসটির ভিতর থেকে ৫৫ জন যাত্রীকে উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ১৭ জনকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত যাত্রীকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল ও বরিশালের শের-ই বাংলা মেডিকে করে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। মর্মান্তিক এই ঘটনায় গ্রেফতারকৃত মোহনের হালকা ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকলেও ভারী যানবাহন চালানোর কোন ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। এছাড়াও বাশার-স্মৃতি পরিবর্তনে
(ঢাকা মেট্রো ব-১১-৬৫৪৯, যাত্রী ধারণ ক্ষমতা-৪৫ সিট) ফিটনেস সার্টিফিকেট থাকলেও গাড়ির ফিটনেস ভালো ছিল না।
মিটার ছিল নষ্ট দুর্ঘটনার পর সে কৌশলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় এবং ঝালকাঠি, টঙ্গী, গাজীপুর, সাভার আশুলিয়া এলাকায় তার বিভিন্ন আত্মীয়ের বাসায় আত্মগোপনে থাকে। আত্মগোপনে থাকাবস্থায় আশুলিয়া থেকে আটক করা হয়।