স্টাফ রিপোর্টারঃ
ভোলার দৌলতখান উপজেলায় চিরকুটে ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়’ লিখে নিজের পাগড়ি দিয়ে মো. আব্দুল হালিম (২৪) নামের এক মসজিদের ইমাম আত্মহত্যা করেছে। নিহত আব্দুল হালিম সদর উপজেলার ভেলুমিয়া ইউনিয়নের চন্দ্রপ্রসাদ গ্রামের মো. ফারুক ফরাজীর ছেলে ও দৌলতখান উপজেলার চরপাতা ইউনিয়নের হাসমত বেপারীর বাড়ির দরজার মসজিদের ইমাম।মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার হাসমত বেপারীর মসজিদের ইমামের রুম থেকে তাঁর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এসময় ওই রুম থেকে আব্দুল হালিমের লেখা একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার দিবাগত রাতে ইমাম আব্দুল হালিম এশার নামাজ পড়িয়ে মসজিদের সাথে তার রুমে চলে যায়। রাত ১২টার দিকে সে সকল আত্মীয়-স্বজনের মোবাইলে তিনি বেঁচে থাকবেন না বলে একটি খুদে বার্তা পাঠায়। পরে তার মোবাইলে স্বজনরা একাধিকবার কল করলেও তিনি তা রিসিভ করেনি। এ অবস্থায় তাঁর ভগ্নিপতি রাসেদ রাত সাড়ে তিনটার দিকে ওই মসজিদে আসেন। মসজিদে এসে আব্দুল হালিমের রুমের ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় তাঁর লাশ দেখতে পেয়ে ভয়ে ডাক চিৎকার দিলে স্থানীয়রা ছুটে আসে। পরে দৌলতখান থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।
পুলিশ জানায়, নিহত আব্দুল হালিমের রুমের ফ্যানের সাথে পাগড়ি দিয়ে তিনি গলায় ফাঁস দিয়েছে। রুম থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সেই সাথে একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে। চিরকুটে লেখা রয়েছে ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। মৃত্যুর পর তাঁর লাশ ময়না তদন্তের জন্য প্রশাসনের কাছে না দেয়ার অনুরোধ জানান। সেই সাথে তাঁর ৪ মাসের সন্তানের দিকে খেয়াল রাখার কথাও লিখেছেন। এবং তার কাছ থেকে কারা কারা টাকা পাবে সেটিও চিরকুটে উল্লেখ করেছেন।
পুলিশ আরো জনায়, আব্দুল হালিম মসজিদে ইমামতির পাশাপাশি দৌলতখানের চর খলিফা মাদরাসায় পড়ালেখা করতেন। তিনি গত দুই বছর আগে বিয়ে করেছেন। এবং তার ৪ মাস বয়সী একটি সন্তান রয়েছে। গত এক সপ্তাহ আগে তার স্ত্রী চার মাসের সন্তান রেখে চলে গেছে। পারিবারিক এ সকল বিষয় ও ঋণগ্রস্ত হয়ে আব্দুল হালিম হতাশায় ভুগছিলেন। আর এসকল হতাশা থেকেই সে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ।
দৌলতখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাকির হোসেন জানান, ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় লাশ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। তবে এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হবে।