পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার কে, এম লতিফ ইনস্টিটিউশনের দশ শ্রেণির এক ছাত্রের মা বিউটিশিয়ান শাম্মী আক্তার (৪০) হত্যার ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বিউটিশিয়ান শাম্মী হত্যা মামলায় ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ইংরেজি শিক্ষিকা আয়শা খানম (৫০) এবং তার দ্বিতীয় স্বামী শেখ সিরাজুস সালেকিন (৩৩) জড়িত থাকার কথা জানিয়ে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেন।
বুধবার (১০ আগস্ট) সকাল ১০টায় স্কুলের সম্মুখ সড়কে এ বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। কে. এম লতীফ ইনস্টিটিউশনের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত স্কুলশিক্ষিকা আয়শা খানম ও নিহত শাম্মীর স্বামী সিরাজুস সালেকীনের দ্রুত বিচার দাবিতে শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বিদ্যালয়ের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
নিহত শাম্মী মঠবাড়িয়া পৌরশহরের কে. এম লতীফ সুপার মার্কেটের শাম্মী বিউটি পার্লারের সত্ত্বাধিকারী। অভিযুক্ত স্বামী সিরাজুস সালেকিন লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার দরবেশপুর গ্রামের শেখ মোহম্মদ আলীর ছেলে এবং শিক্ষিকা আয়শা খানম শরণখোলা উপজেলার রাজাপুর গ্রামের এমাদুল হকের স্ত্রী।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন- স্কুলশিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন, গোলাম রাব্বি, কামরুল হাসান, মো. রাকিব ও মো. ইমরান হোসেন প্রমুখ।
এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা হত্যায় জড়িত বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা আয়শা খানমকে বহিষ্কার ও হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি জানান।
জানা গেছে, বিউটিশিয়ান শাম্মি আক্তারের সাথে ফিরোজ আলমের প্রথম বিয়ে হয়। তাদের দুই সন্তান থাকা অবস্থায় ১২ বছর আগে স্বামী-স্ত্রীর বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। এরপর শাম্মী বিউটি পার্লারের ব্যবসা শুরু করেন। যা দিয়ে দু’সন্তানের লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছিলেন। গত দুই বছর আগে সিরাজুস সালেকিন নামে এক তরুণের সাথে তার দ্বিতীয় বিয়ে হয়। আপন ভাবি স্কুল শিক্ষক আয়শা খান এ বিয়ের মধ্যস্থতা করেন।
এক সপ্তাহ আগে বিবাহ বার্ষিকী উপলক্ষে শাম্মীর স্বামী সালেকিন ঢাকা থেকে মঠবাড়িয়া আসেন। বিবাহ বার্ষিকী অনুষ্ঠানের জন্য রবিবার রাতে স্বামী সালেকিন ও ভাবি আয়শা খানম তাদের থানাপড়ার ভাড়াটিয়া বাসায় অবস্থান করছিলেন। রাতের খাবার শেষে শাম্মি তার স্বামীকে নিয়ে নিজ কক্ষে ঘুমিয়ে পড়েন। পাশের আলাদা কক্ষে ভাবি ঘুমান।
এরপর রাত ৩টার দিকে শাম্মি ঘুম থেকে জেগে স্বামীকে বিছানায় না পেয়ে কক্ষ থেকে বের হয়ে ভাবির কক্ষে ঢুকে দুইজনকে অনৈতিক কাজে লিপ্ত থাকা অবস্থায় দেখতে পান। এ নিয়ে তাদের মাঝে ঝগড়া বাঁধে। এক পর্যায় স্বামী ও ভাবি মিলে শাম্মীর মুখে বালিশ চেপে ধরে হত্যা করে। পরে পুলিশ হাসপাতাল থেকে তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
এ ঘটনায় নিহত শাম্মীর ছেলে সাইম আলম (১৭) মঙ্গলবার মঠবাড়িয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করে। পুলিশ সিরাজুস সালেকীন ও মামি স্কুলশিক্ষিকা আয়শা খানমকে পুলিশ গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করে।