কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার শিমুলবাড়ী গ্ৰামের লাউখেত।বাজারে আগাম জাতের লাউ উঠতে শুরু করেছে। চলতি মৌসুমে এই সবজির ভালো ফলন হয়েছে। এ ছাড়া দাম ভালো পাচ্ছেন কৃষকেরা। অনেকে জমি বর্গা নিয়ে লাউ চাষ করে লাভবান হচ্ছেন।
উপজেলার প্রান্তিক সবজি চাষিরা চলতি মৌসুমে আগাম জাতের লাউ চাষ করেছেন। এতে তেমন পরিশ্রম করতে হয় না। শুধু খেত প্রস্তুত করে নির্দিষ্ট দূরত্বে বীজ বপন করতে হয়। গাছ এক-দেড় ফুট লম্বা হলে মাচা তৈরি করে তাতে তুলে দিলেই কিছুদিন পর লাউয়ের ফলন আসা শুরু করে। একেকটি গাছ থেকে ৫০-৬০টি লাউ পাওয়া যায়।
পাইকারি বাজারে লাউ ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সবজি ব্যবসায়ীরা খুচরা বিক্রি করেন ৫০-৬০ টাকায়।কৃষকেরা জানান, তাঁরা একই জমিতে পাট, লালশাক ও লাউয়ের চাষ করেছেন। শাক কিছুটা বড় হলে তুলে নিয়ে লাউগাছের মাচা তৈরি করে দিয়েছেন। মাচায় মাচায় দুলছে নানান জাতের লাউ। কম খরচে অল্প জমিতে অন্য ফসলের পাশাপাশি লাউ চাষ করতে পেরে খুশি চাষিরা।
উপজেলার নাওডাঙ্গা গ্রামের বর্গাচাষি সন্তোষ চন্দ্র রায় জানান, তাঁর নিজস্ব জমি নেই। অন্যের আড়াই বিঘা জমি বর্গা নিয়ে লাউ চাষ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় একদিকে লাউয়ের বাম্পার ফলন হয়েছে, অন্যদিকে বাজারদর ভালো থাকায় এ পর্যন্ত তিনি ১ লাখ টাকার লাউ বিক্রি করেছেন। বাজারদর এ রকম থাকলে আড়াই বিঘা জমির দুই থেকে আড়াই লাখ টাকার লাউ বিক্রি করবেন তিনি।
পূর্ব ফুলমতি গ্ৰামের লাউচাষি মোশারফ হোসেন দুলু ও মিলন ইসলাম জানান, তাঁরা ১ বিঘা জমিতে গ্রীষ্মকালীন লাউ চাষ করেছেন। গত বছরের চেয়ে এ বছর লাউয়ের ফলন ভালো হয়েছে। দামও ভালো পাচ্ছেন। এখন পর্যন্ত ৭০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছেন। এক বিঘা জমিতে ১০-২০ হাজার টাকা খরচ করে লক্ষাধিক টাকা আয় করা সম্ভব বলে তাঁরা অভিমত দেন।
শিমুলবাড়ী গ্ৰামের লাউচাষি নূর মোহাম্মদ শেখ বলেন, ‘আমাদের এখানকার মাটি লাউ চাষের জন্য উপযোগী। এখন আমরা সারা বছর লাউ চাষ করি। দাম ভালো পাচ্ছি।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. নিলুফা ইয়াছমিন জানান, প্রান্তিক চাষিদের লাউ চাষে উদ্বুদ্ধ করা ও বিভিন্ন সহযোগিতা দেওয়ায় দিন দিন লাউ চাষ বাড়ছে। উপজেলার মাটি লাউ চাষের জন্য উপযোগী। বিশেষ করে নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের মাটি দোআঁশ এবং অপেক্ষাকৃত উঁচু হওয়ায় চাষিরা ব্যাপক পরিমাণে লাউসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করছেন। উপজেলায় চলতি মৌসুমে ১২ হেক্টর জমিতে লাউয়ের চাষ করা হয়েছে।