স্টাফ রিপোর্টারঃ সন্ধ্যা হলেই বিচ্ছন্ন হয়ে যায় দ্বীপজেলা ভোলা। তখন আর অন্য জেলায় যাওয়ার কোনো উপায় থাকে না। কিন্তু পদ্মা সেতু চালু হওয়ার মধ্যদিয়ে পাল্টে গেছে এ জেলার চিত্র। পদ্মা সেতুর সুফল ভোগ করতে শুরু করেছে এ অঞ্চলের মানুষ। তবে ঢাকা-ভোলা রুটে সরাসরি বাস সার্ভিস চালু না থাকায় এখনো অনেকটা দুর্ভোগকে সঙ্গী করে তাদের রাজধানীতে যেতে হয়। তাই ভোলা-ঢাকা রুটে বাস সার্ভিস চালু ও নিরবিচ্ছন্ন ফেরি সার্ভিস চালু থাকলে যাত্রা পথে স্বস্তি ফিরে আসবে বলে মনে করছেন সাধারণ মানুষ। এর মধ্য দিয়ে পদ্মা সেতুর শতভাগ সুফল ভোগ করতে পারবেন ভোলাবাসী। খুব শিগগিরই ভোলা-ঢাকা রুটে সরাসরি বাস সার্ভিস চালু হবে বলে জানিয়েছে জেলা বাস সমিতির নেতারা। বর্তমানে দক্ষিণাঞ্চলের এই দ্বীপ জেলা থেকে রাজধানীতে যোগাযোগের একমাত্র ভরসা লঞ্চ। কিন্তু সেই লঞ্চ র্নিধারিত একটা সময়ে চলাচল করে, তাই জরুরি প্রয়োজন থাকলেও সন্ধ্যার পর ঢাকায় যেতে পারেন না এ জেলার মানুষ। কিন্তু পদ্মা সেতুর চালু হওয়ার পর থেকে সেই চিত্র পাল্টে গেছে। এখন যে কোন সময় রাজধানীতে যেতে পারছেন দ্বীপের মানুষ। তবে ভোলা-ঢাকা রুটে বাস সার্ভিস চালু না থাকায় এখনো দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ অবস্থায় যাতায়াত ব্যবস্থা আরও সহজ করতে এ জেলা থেকে বাস সার্ভিস চালুর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। সজিব নামে এক ব্যক্তি বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় দক্ষিণের ২১ জেলার মানুষ পুরোপুরি সুফল ভোগ করছে, কিন্তু আমরা ভোলার মানুষ, সেই সুবিধা পাচ্ছি না। তাই এখানে বাস সার্ভিস চালু হলে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও সহজ হবে। সাংস্কৃতিক কর্মী তালহা তালুকদার বাঁধন বলেন, সন্ধ্যা হলেই ভোলার মানুষ জরুরি প্রয়োজনে কোথাও যেতে পারে না। আমার সারা দেশ থেকে বিচ্ছন্ন হয়ে থাকি। তাই বাস সার্ভিস চালু এবং দিবা-রাত্রি ফেরি চালু হলে পদ্মা সেতু হয়ে আমরা দ্রুত ঢাকায় পৌঁছাতে পারব। এদিকে ভোলার ভেদুরিয়া ফেরি ঘাটে আগে পণ্যবাহী ট্রাককে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হতো। বর্তমানে সেই পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে, স্বস্তি ফিরেছে। এখন ঘাটে ফেরির জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপক্ষো করতে হয় না। অল্প সময়ে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকাসহ গন্তব্যে যেতে পারছেন পরিবহন শ্রমিকরা। ট্রাক চালক মোসলে উদ্দিন ও সিরাজ বলেন, আগে আমাদের ঘাটেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপক্ষো করতে হতো। কখন ঢাকায় পৌঁছাব, তার কোন নিশ্চয়তা ছিল না। কিন্তু এখন পদ্মা সেতু চালু হওয়ায়তে ফেরি দিয়ে বরিশাল হয়ে খুব কম সময়ে ঢাকা যেতে পারছি। এতে আমাদের দুর্ভোগ অনেক কমেছে। যাতায়াত ব্যবস্থা সহজ হলে জেলার অর্থনৈতিক উন্নয়নের বিপুল সম্ভাবনা দেখা দেবে। রাজধানীর সঙ্গে বাস সার্ভিস চালু হলে যোগাযোগ ব্যবস্থার আরও উন্নয়ন হবে বলে মনে করছে ফেরি কর্তৃপক্ষ। ভোলা-বরিশাল রুটের ফেরি সার্ভিসের ইনচার্জ মোয়াজ্জেম হোসেন জসিম বলেন, বাস সার্ভিস চালু হলে আমরাও দিবারাত্রী ফেরি চালু রাখব। একই সঙ্গে ফেরির সংখ্যা বাড়ানো হবে। ভোলাসহ দক্ষিাণাঞ্চলের যাত্রীদের যাত্রাপথ আরও সহজ করতে খুব শিগগিরই ভোলা-ঢাকা রুটে বাস সার্ভিস চালু হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, আমরা প্রথম বারের মতো ভোলা-ঢাকা রুটে বাস সার্ভিস চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন ফেরি সার্ভিস নিরবচ্ছিন্ন হলে আর কোন সমস্যা থাকবে না। ভোলা-বরিশাল সেতু হলে তো যোগাযোগ আরও সহজ হবে।