স্টাফ রিপোর্টারঃ ভোলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা মনপুরা। এই দ্বীপটি তিন দিকে মেঘনা, একদিকে বঙ্গোপসাগর দ্বারা বেষ্ঠিত। উপকূল বা দ্বীপ কিংবা চরঞ্চাল বলে চেনে সবাই। এবার ওই তকমা থেকে দায় মুক্তি পাবে এমনটাই মনে করছেন বাসিন্দারা। এতেই সিক্ত নন দ্বীপবাসি। পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের সাথে সাথে সামগ্রিক অর্থনৈতিক মুক্তির পাশাপাশি ব্যবসা-বানিজ্যের প্রসার সহ জীবনযাত্রার মানন্নোয়নের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে পিছিয়ে পড়া দেড় লাখ জনগোষ্ঠি। এর কারণ হচ্ছে ভোলা জেলার তজুমুদ্দিন উপজেলার সাথে মনপুরার সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষে ফেরী সার্ভিস চালুর উদ্যোগ গ্রহন করেছে বিআইডব্লিটিসি। সেই লক্ষে গত ২৫ মে মনপুরা সরেজমিনে পরিদর্শন করে গেছেন বিআইডব্লিটিসি চেয়ারম্যান আহমদ শামীম আল রাজী। সাথে আসেন বিআইডব্লিটিএ চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক। এতেই স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে ফেরী বাস্তবায়নের পেছনে মূল কারিগর এই আসনের এমপি আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব। এমপি’র চেষ্ঠায় মনপুরা-তজুমুদ্দিন রুটে বিআইডব্লিউটিসি ফেরী সার্ভিস চালুর উদ্যোগ গ্রহন করছেন বলে জানায় বিআইডব্লিটিসি চেয়ারম্যান। জানা যায়, মনপুরা থেকে তজুমুদ্দিনের দূরত্ব ১১ নটিক্যাল মাইল। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের সাথে সেই রুটে চলাচলকারী ফেরী সার্ভিস গুলো অকেজো হয়ে পড়বে। তাই বিআইডব্লিটিসি সেই ফেরী সার্ভিস গুলো বিভিন্ন রুটে চালুর রাখতে প্রদক্ষেপ গ্রহন করে। মনপুরা-তজুমুদ্দিন রুটে ফেরী সার্ভিস চালুর উদ্যোগ গ্রহন করে বিআইডব্লিটিসি। মনপুরা মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির নেতা অলি উল্লা কাজল ও আমানত উল্লা আলমগীর জানান, এই দ্বীপের ব্যবসা বানিজ্য তথা মৎস্য আহরনের ওপর নির্ভর। ফেরী সার্ভিস চালু হলে এখানকার আহরিত ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছ দিনে দিনে ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠানো সম্ভব হবে। এতে জেলে ও ব্যবসায়ীরা লাভবান হবে। কৃষক নেতা মনির, মামুন, কামাল, আলমগীর সহ অনেক জানান, ফেরী সার্ভিস চালু হলে এই দ্বীপের উৎপাদিত ধান ও কৃষি পন্য বিক্রি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সড়ক পথে পৌছানের মাধ্যমে কৃষক ন্যায্য মূল্য পাবে। এতে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে, দেশের রাজস্ব আয় বাড়বে। দ্বীপের বাসিন্দারা জানান, ফেরী সার্ভিস চালুর সাথে সাথে মনপুরা দ্বীপ বা উপকূল কিংবা চরাঞ্চলের কলঙ্ক থেকে মুক্তি পাবে। তাছাড়াও তাদের সামগ্রিক অর্থনৈতক মুক্তি পাবে বলে আশা করছেন বাসিন্দারা। উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোঃ আলমগীর হোসেন বলেন, পদ্মা সেতুর সাথে দ্বীপের ভাগ্য জড়িত। পদ্মা সেতু উদ্বোধন হলে সেখানকার চলাচলকারী ফেরী মনপুরা-তজুমদ্দিন ফেরী সার্ভিস রুটে চলবে। এতে এই দ্বীপের শিক্ষার হার বাড়বে। এখানকার ছেলে-মেয়েরা উচ্চ শিক্ষা নেওয়ার জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শিক্ষা গ্রহনে উৎসাহী হবে। উপজেলা আ’লীগের সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জাকির হোসেন মিয়া জানান, পদ্মা সেতু আমাদের অহংকার। সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে একাই বাস্তাবায়ন করেছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। বিচ্ছিন্ন মনপুরাকে ফেরী সার্ভিসের মাধ্যমে মূল ভূখন্ডে যুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহন করায় তিনি এমপি জ্যাকবের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এদিকে স্বপ্নের ফেরী সার্ভিস চালুর উদ্যোগ গ্রহন করায় এমপি জ্যাকবের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে উপজেলা আ’লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান শেলিনা আকতার চৌধুরী জানান, স্বপ্নের পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর দুর্গম মনপুরাবাসীর স্বপ্নের ফেরী সার্ভিস বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছেন এমপি জ্যাকব। এতে দুর্গম পিছিয়ে পড়া এই দ্বীপের বাসিন্দারা অর্থনৈতিক মুক্তির পাশিপাশি সকল ক্ষেত্রে এগিয়ে যাবে। এতে দেশের জিডিপি বৃদ্ধির ভূমিকা রাখবে দ্বীপের বাসিন্দরা। এই ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল-নোমান জানান, এমপি জ্যাকবের উদ্যোগে দেশের একমাত্র উপজেলা মনপুরা উপজেলা প্রশাসন বিআইডব্লিটিসি’র আহবানে সাড়া দিয়ে ফেরী চালুর প্রস্তাবের আবেদন করে। পদ্মা সেতু মনপুরার জন্য বিশেষ আর্শিবাদ। মনপুরা-তজুমুদ্দিন রুটে ফেরী সার্ভিস চালু হলে দুর্গম পিছিয়ে পড়া দ্বীপের বাসিন্দাদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি বাড়বে। এতে দেশের জিডিপি বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে দ্বীপের বাসিন্দারা।