চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে এখন পর্যন্ত ১৮ জন নিহত হয়েছেন।
রবিবার (৫ জুন) সকাল ৮টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ১৮ জনের মরদেহ এসেছে। তাদের মধ্যে তিনজন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের কর্মী।
অগ্নিকাণ্ডে আহত হয়েছেন আরও চার শতাধিক। হতাহতদের মধ্যে ডিপোর শ্রমিক, স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরাও রয়েছেন।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল সূত্র থেকে জানা গেছে, অতিরিক্ত রোগীর চাপে অনেককে ওয়ার্ড ছাড়াও হাসপাতালের মেঝেতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া নগরীর অন্যান্য হাসপাতাল এবং কম্বাইন্ড মিলিটারি হাসপাতালেও (সিএমএইচ) চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে, রবিবার (৫ জুন) ভোরে পার্শ্ববর্তী কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষ্মীপুর থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। সবমিলিয়ে বর্তমানে ২৫টি ইউনিট কাজ করছে। তবে সকাল সাড়ে ৮টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১০ ঘণ্টায়ও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি।
এছাড়া চট্টগ্রামের সব চিকিৎসকের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদেরও চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ সরকারি হাসপাতালগুলোতে কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন।
এর আগে মধ্যরাতে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে করেছি, আহত দেড়শ জনের মতো হবে। তবে আহত আরও অনেক বেশি। এখানে অনেক চিকিৎসক এরই মধ্যে এসেছেন। আমরা অন্যদেরও আসার আহ্বান জানিয়েছি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ডিপোতে এসময় প্রায় ৫০ হাজার কনটেইনার ছিল। সেখানে থাকা দাহ্য পদার্থ থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে।
এদিকে, শনিবার দিনগত রাতে বাতাসের কারণে আগুন বাড়তে থাকে। ডিপো এলাকায় রয়েছে পানি স্বল্পতা।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদর দফতরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (মিডিয়া সেল) মো. শাহজাহান শিকদার বলেন, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে শনিবার রাত ১১টা ২৫ মিনিটে আগুন লাগার খবর পাওয়া যায়। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ৮টি ইউনিট এবং পরবর্তীতে আরও ৮টি ইউনিট পৌঁছে কাজ শুরু করে। বর্তমানে ২৫টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।
পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্র জানায়, রাত পৌনে ১১টার দিকে এক কনটেইনার থেকে অন্য কনটেইনারে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। একটি কনটেইনারে রাসায়নিক থাকায় বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এ বিস্ফোরণে ঘটনাস্থল থেকে অন্তত চার কিলোমিটার এলাকা কেঁপে ওঠে। আশপাশের বাড়িঘরের জানালার কাচ ভেঙে পড়েছে।