দৈনিক সমিতির নামে গ্রাহকের সাথে প্রতারণা
নগরীতে ২০ হাজার টাকা দিয়ে আড়াই লাখ টাকার নোটিশ
রিপন রানা ॥ বরিশালে ব্যাংঙ্গের ছাতার মতো গজিয়ে উঠছে নামে বেনামে দৈনিক সমিতি। তাদের টার্গেট অসহায় গরীব মানুষের ওপর। অসহায় ও গরীব দুখী মানুষের সুযোগ নিয়ে টাকা লোন দেওয়ার কথা বলে প্রতারণা করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। দৈনিক সমিতি’র প্রতিষ্ঠাতা তারিকুল ইসলাম লোন দেওয়ার কথা বলে অন্যের জমি লিখে নেওয়ার চেষ্টা কালে প্রতারণার দায়ে জেল খেটেছে বলে অভিযোগ করেন হাসিনা। ভুক্তভোগী হাসিনা আরো বলেন, জেল হাজত থেকে বের হয়ে মিলনকে মামলা দিয়ে হয়রানী করে যাচ্ছেন সমিতির মালিক। এছাড়াও নগরীর ২৪ নং ওয়ার্ড সাগরদী ধান গবেষণা রোড এলাকার ভুক্তভোগী ডালিম বেগম প্রতিবেদককে জানান, ২০১৯ সালে (বিশ হাজার টাকা) ব্যবসার জন্য লোন নেই সমিতি থেকে। করোনার কারনে দিতে কিছু দিন দেরি হলেও সুদ আসলসহ টাকা পরিশোধ করে দেন। কিন্তু কিছুদিন ধরে সমিতির মালিক তরিকুল ইসলাম আমার বাসায় এসে আরো টাকা পাবে বলে দাবি করেন। সমিতির মালিকের দাবিকৃত টাকা না দেওয়ার কথা বলায় আমার স্বামী মোঃ নাজমুল সিকদারের বিরুদ্ধে (দুই লাখ পঞ্চাশ হাজার) টাকা উল্লেখ করে একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। তিনি আরও বলেন, শুধু আমাদের সাথেই নয়। সাগরদী ধান গবেষণা রোড ও লালা দিঘির পাড় এলাকায় ঘুরলে অনেক প্রমাণ পাবেন বলে অভিযোগ করেন ডালিম। অসহায় পরিবারের কথা অনুযায়ী প্রতিবেদক অনুসন্ধানে গেলে বেশকিছু প্রমাণ পাওয়া যায়। সাগরদী এলাকার হাসিনা বেগম (৫৫) কে চন্দ্রদ্বীপ ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি পাঁচ লাখ টাকা লোন দেওয়ার কথা বলে (এক লাখ বিশ হাজার) টাকা ও জমি সংক্রান্তে কাগজ পত্র জমা নেয়। কিন্তু দীর্ঘদিন টাকা দেওয়ার কথা বলে ঘুরাতে থাকেন। দীর্ঘদিন ঘুরে হাসিনা বেগম ও একই এলাকার মিলন নামে আরও এক ব্যাক্তির (এক লাখ বিশ হাজার) টাকা জমা নিয়ে (পাঁচ লাখ) টাকা আদালতের মাধ্যমে দেওয়ার কথা বলে আদালতে ডাকলে হাসিনা ও মিলনের স্ত্রী আসেন। তখন আদালতের দায়িত্বরত ম্যাজিষ্ট্রেট হাসিনা ও মিলনের স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করেন জমি বিক্রি বাবদ তরিকুলের কাছ থেকে আপনাদের টাকা বুঝে পেয়েছেন কিনা। তখন ভুক্তভোগী হাসিনা ও মিলনের স্ত্রী বলেন স্যার আমরা কোন টাকা পাইনি। টাকা নেওয়ার জন্যই এখানে এসেছি। তবে জমি বিক্রি করার জন্য না। সমিতি থেকে লোন নেওয়ার জন্য তার সাথে এসেছি। কথাগুলো শুনে ম্যাজিষ্ট্রেট প্রতারনা সন্দেহে তরিকুল ইসলামকে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়। দীর্ঘদিন জেল খেটে বের হয় ফের অসহায় পরিবারকে টাকা পয়সা না দিয়ে উল্টো তাদের মামালা দিয়ে হয়রানী করে যাচ্ছে। মিলনের স্ত্রী বলেন, আমাদের সাত পিস চেক বইয়ের পাতা তাদের কাছে জমা আছে। স্থানীয় ভাবে সালিশ মিমাংসা হইছে। তরিকুল ইসলাম আমাদের চেক বইয়ের পাতা আমাদের দিচ্ছে না। এছাড়াও ঝালমুড়ি বিক্রেতা খলিলুর রহমান জানান, তরিকুল ইসলাম এর কাজ থেকে পাঁচ বছর আগে (৩০ হাজার) টাকা আনছি। আমি কিস্তি বাবদ প্রতিদিন দুই শো থেকে পাঁচ শত টাকা করে দিয়েছি। তাদের এতো টাকা দেওয়ার পরেও আমার কাছে আরও (৮৪৫০০) টাকা দাবি করেন। আমি গরীব মানুষ ঝালমুড়ি বিক্রি করি এতো টাকা কোথায় থেকে দেবো আপনাকে বলুন। এছাড়াও আসলাম, খোকন (হোটেল খোকা), কামাল সাদ্দাম সহ একাধিক ব্যক্তীরা, সমিতির মালিক এর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। সমিতির মালিকের হাত থেকে রক্ষা পেতে পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয়দের হস্তক্ষেপ কামনা করেন ভুক্তভোগী পরিবার গুলো। এবিষয়ে অভিযুক্ত সমিতির মালিক তরিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি অভিযোগ গুলো অস্বীকার করে বলেন, আমি তাদের কাছে সমিতির লোন বাবদ টাকা পাবো। টাকা না দেওয়ার কারনে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছি।