ছাতক প্রতিনিধি:
ছাতকে এক শিক্ষিকা বিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীকে বেদড়ক পিঠিয়ে আহত করেছেন। ঘটনার ১৩ দিন অতিবাহিত হলেও এ বিষয়ের কোন সমাধান হয়নি। শিক্ষার্থীদের অভিবাবকরা বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতিকে বিষয়টি অবহিত করেছেন। জানাগেছে, গত ৮ সেপ্টেম্বর উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের বনগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা রুহেনা খানম হাবিবা শিক্ষার্থী ইকরাম হোসেন, ফরহাদ আলী ও এমরান হোসেনকে ডেকে নিয়ে বেদড়কভাবে পিঠিয়ে আহত করেছেন।
৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী ইকরাম হোসেন বনগাঁও গ্রামের লাল মিয়ার পুত্র, ৪র্থ শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থী এমরান হোসেন একই গ্রামের সাহাব উদ্দিনের পুত্র ও ৩য় শ্রেণির শিক্ষার্থী ফরহাদ আলী গ্রামের ইন্তাজ আলীর পুত্র। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রামে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামাল উদ্দিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান,ওই দিন বিদ্যালয়ে তিনি উপস্থিত ছিলেন না। পরে ঘটনাটি জানার পর সভাপতির মাধ্যমে বিষয়টি নিস্পত্তির চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। প্রধান শিক্ষক কামাল উদ্দিন আরো জানান,বিদ্যালয়ে শিক্ষক রয়েছেন ৬ জন, শিক্ষক বিল্লাল হোসেন পিটিআই প্রশিক্ষণে, শিক্ষিকা ইফাত সাল সাবিন রাবি অনিয়মিত আর নিজে সহ চার জন শিক্ষক -শিক্ষিকা দিয়ে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত চালু এ বিদ্যালয় পরিচালনা করতে তাকে হিমসিম খেতে হয়। রুহেনা খানম হাবিবা প্যারা শিক্ষক। ঘটনার পর থেকে ওই শিক্ষিকাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
শিক্ষার্থী ইকরাম হোসেন, ফরহাদ আলী ও এমরান হোসেন জানান, বিদ্যালয়ের মাঠে তারা খেলতেছিল এ সময় হাবিবা ম্যাডাম তাদের ডেকে এনে মারপিট করেছেন।
অভিবাবক লাল মিয়া জানান, বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার মান ভালো নেই। শিক্ষক -শিক্ষিকারাও নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসেন না। বিদ্যালয়ের সময় মতো তারা আসেননি। এমতাবস্থায় হযরলব অবস্থায় বিদ্যালয়টি পরিচালিত হচ্ছে। কিছু দিন আগেও বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অনুপস্থিতির কারণে খাতাপত্র নিয়ে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রহমান। এরপর ও বিদ্যালয়ে শিক্ষকরা দেরীতে আসেন। তার ছেলেকে শিক্ষিকা কর্তৃক মারপিঠের ঘটনায় তিনি আইনের আশ্রয় নিবেন বলে জানিয়েছেন।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সহ সভাপতি হেলাল উদ্দিন এ বিষয়ে জানান, শিক্ষিকা কর্তৃক ছাত্রদের মারপিঠের ঘটনা ছাত্র অভিবাবকদের নিকট থেকে তিনি অবহিত হয়েছেন। শুক্রবার মসজিদে ছাত্র অভিবাবকদের তিনি বিষয়টি নিস্পত্তির জন্যও আশ্বস্ত করেছিলেন। প্রধান শিক্ষকের গাফিলতির কারণে তা সম্ভব হয়নি।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ছামির আলী জানান,বিষয়টি জেনে তিনি সমাধানের চেষ্টা করেছেন। পরিচালনা কমিটির কোন সভা আহবান না করায় বিষয়টি জটিল আকার ধারণ করতে যাচ্ছে। শিক্ষকের ব্যাপারে তিনি জানান, সভাপতির দায়িত্ব নিয়েছেন দুই বছর হয়। রাবি নামের এক শিক্ষিকাকে ২ বছরে মাত্র ২ দিন বিদ্যালয়ে আসতে দেখেছেন তিনি। একজন পিটিআই প্রশিক্ষণে আছেন। এতে করে শিক্ষক স্বল্পতার কারণে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে।