মাদারীপুর প্রতিনিধি:
মাদারীপুরে চৌধুরী ক্লিনিকে চিকিৎসকের অবহেলায় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। নিহত গৃহবধুর নাম সম্পা আক্তার (৩০)। তিনি মাদারীপুর পুরান বাজার সংলগ্ন শান্তিনগর এলাকার সৌদি প্রবাসী শফিকুল ইসলামের স্ত্রী।
স্বজনদের অভিযোগ চিকিৎসকের অবহেলায় তার মৃত্যুর হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬অক্টেবর) আনুমানিক রাত ৮টার দিকে মাদারীপুর শহরের চৌধুরী ক্লিনিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত প্রসূতির স্বজন সূত্রে জানা গেছে, গত বুহস্পতিবার আনুমানিক বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে প্রসব বেদনা নিয়ে মাদারীপুর শকুনী লেগ সংলগ্ন চৌধুরী ক্লিনিকে ভর্র্তি করায় স্বজনরা। পরে ক্লিনিকের ডাঃ হরষিদ বিস্বাস ও ডাঃ খবির উদ্দিন (স্বপন) প্রসূতিকে অপারেশন রুমে নিয়ে সিজার করেন। এর কিছুক্ষনের মাথায় দায়িত্বরত নার্স একটি ছেলে বাচ্চা নিয়ে এসে স্বজনদের দেখান।
কিছুক্ষন পর ডাক্তার এসে জানায় আপনাদের রোগীর যে শ্বাসকষ্ট ছিলো তাতো আপনারা আমাদের জানান নি, আপনাদের এই রোগী জরুরী ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। এই বলে ডাক্তার নিজেই একটা এ্যাম্বুলেন্স ঠিক করে রোগীকে উঠিয়ে দিলেন। এ্যাম্বুলেন্সে করে রোগীকে ফরিদপুর নিয়ে যাওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যে প্রসূতি সম্পা আক্তারের মৃত্যু হয়।
নিহত সম্পা আক্তারের ভাই বলেন, আমার বোনের তো কোনো শ্বাসকষ্ট ছিলোনা কোনদিন। রোগীর যদি শ্বাসকষ্ট হয়েও থাকে সেটাকি অপারেশনের আগে ডাক্তার পরিক্ষা করে নিবে না? রোগীর কি অবস্থা সেটাকি সে চেকাপ করে নিবে না? আমারতো মনে হয় তারা অপারেশনের আগে সেই পরিক্ষা নিরিক্ষা গুলো করেনি। একজন অপারেশনের রোগী কিভাবে ওই অবস্থায় একজন ডাক্তার নিজেই একটা এ্যাম্বুলেন্স ঠিক করে রোগীকে উঠিয়ে দিলেন? তখন আমরা নিরুপায় হয়ে রোগীকে নিয়ে ফরিদপুর রওনা দিলে ১০ মিনিটের মাথায় আমার বোনের মৃত্যু হয়।
নিহত সম্পা আক্তারের মা বলেন, আমার মেয়ের কখনো শ্বাসকষ্ট ছিলোনা। ডাক্তারের অবহেলার কারনেই আমার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। সন্তানকে নিজ চোখে একটু দেখে যেতে পারেনি আমার মেয়েটা।
এ বিষয়ে ডাক্তার হরোষিদ বিশ^াস বলেন, অপারেশন আমার যথেষ্ঠ ভালো হয়েছে এবং বাচ্চাও ভালো আছে। অপারেশনের শেষের দিকে রোগীর যে সমস্যা হয় প্রেসার লো এবং শ্বসকষ্ট সে সময় প্রথম থেকেই আমার সাথে ডাঃ খবির উদ্দিন স্বপন ছিলেন। তিনি চেষ্টা করছেন এবং অপারেশনের শেষে আমিও তাকে সর্বাত্নক সহযোগিতা ও চেষ্টা করেছি। রোগী যখন মোটামুটি ঝুকির মধ্যে আছে তখন আমরা তাদের কে বললাম রোগীকে এখন রেফার করা উচিৎ তখন তারা সিদ্ধান্ত নিয়ে বললো ঠিক আছে। আমরা তখন তাকে রেফার করে দেই। এখানে আমাদের সামান্যতম কোনো অবহেলা ছিলোনা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাদারীপুর সিভিল সার্জন ডা. মো. মুনির আহমেদ খান বলেন, আমি এখনো বিষয়টি শুনিনি। তবে এ ঘটনায় অভিযোগ আসলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
মাদারীপুর সদর থানার ওসি মনোয়ার হোসেন চৌধুরী জানান, প্রসূতির মৃত্যুর বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।